আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বে প্রতি বছর বিশেষ গুরুত্বের সাথে এই দিবসটি উদযাপন হয়ে থাকে। স্থানীয় প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্যে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সর্বত্রই এর কার্যক্রম জুড়ে থাকে স্বাধীন মানুষ হিসেবে নারীকে সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন, তাদের আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা এবং নারীর সমানাধিকারবিরোধী রীতি-প্রথা-সংস্কৃতি ও সামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা দূর করে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ। আর এসব কাজের চূড়ান্ত লক্ষ্য অতি অবশ্যই নারীর বিরুদ্ধে বিদ্যমান সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা।
নারী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘নারীর সমঅধিকার বাস্তবায়নে আমি সমতার প্রজন্ম’। এই প্রতিপাদ্যে বর্তমান প্রজন্মকে নারীর সমান অধিকারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গোতেরেস এবারের টঘঈঝড৬৪ বিষয়ক একটি প্রস্তুতিমূলক সভায় বলেছেন, বেশ কয়েক শতাব্দী আগে দাসপ্রথা যেমন মানব সভ্যতার ইতিহাসকে কালিমালিপ্ত করে রেখেছে, বর্তমানেও সভ্যতার অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রভূত উন্নয়ন সত্তে¡ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নারীর প্রতি যে বৈষম্য বিদ্যমান তা একটি কালিমালিপ্ত অধ্যায় হয়ে থেকে যাবে।
সদ্য প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম-এর নারীর অবস্থা জরিপের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, সারা পৃথিবীতে দক্ষিণ এশিয়া হলো নারীর প্রতি বৈষম্য ও অসমতার প্রশ্নে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। যদিও নারী-পুরুষ সমতার প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সামনের সারিতে, তথাপি এখানে নারীর অগ্রগতি যে হারে হচ্ছে, তাতে বৈষম্যমুক্ত একটা অবস্থায় পৌঁছুতে আরো ৭১ বছর লাগবে।
এটা সবারই জানা, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের সঙ্গে শ্রমিক নারীর অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাসটি গভীরভাবে সম্পৃক্ত, যার সূচনা হয় ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। সেবার মজুরিবৈষম্য লোপ, যৌক্তিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন কারখানার শ্রমিক নারীরা। সেই মিছিলে আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারি বাহিনীর নিপীড়ন নেমে এসেছিল। এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে আগত নারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন। এর পরের বছর ৮ মার্চকে নারীদের সমঅধিকার দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক দিবসটি উদযাপনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানানোর মাধ্যমে এটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। সেই থেকে নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয়ে সারা পৃথিবী জুড়েই দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।
শ্রমিক নারীদের আন্দোলনের ঘটনার সূত্রে আজকের আন্তর্জাতিক নারী দিবস; তার ১৬৩ বছর পরও কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি মজুরিবৈষম্য এখনো আছে। মজুরিবিহীন গার্হস্থ্য কাজ ও অনানুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে তো বটেই, এমনকি অনেক আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রেও এখনো নারীদের ৮ ঘণ্টার বেশি শ্রম দিতে হয়। তদুপরি নারীর জন্য অনেক কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এখনো অনিরাপদ ও অমানবিক। কাজেই কর্মক্ষেত্রে নারীর অবস্থা বিষয়ে আলোকপাত করা এখনো প্রাসঙ্গিক। এ লেখায় তা নিয়েই কিছু কথা বলবার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।
১৯৯৬ সাল থেকে জাতিসংঘ নারী দিবস উদযাপনের জন্য নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য ঘোষণা করে আসছে। এ সময়ের মধ্যে একে একে যেসব প্রতিপাদ্য ঘোষিত হয়েছে তার মধ্যেও কয়েকটি সরাসরি নারীর উপার্জনমূলক কাজের পথ প্রশস্ত করার সাথে যুক্ত, যেমন ‘নারী ও কিশোরীদের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ’; ‘সমান অধিকার, সমান সুযোগ : সকলের অগ্রগতি’; ‘শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণ— মর্যাদাপূর্ণ কাজে নারীর অংশগ্রহণের মহাসড়ক’, ইত্যাদি।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উপার্জনমূলক কাজের চাইতে মজুরিবিহীন পুনরুৎপাদনমূলক কাজেই মূলত নারীদের যুক্ততা। পুরুষের আধিপত্যবাদী সমাজ মানসিকতা নারীদের এই অবস্থায় দেখতেই অভ্যস্ত। সমাজ মানসিকতা এখনো এই অবস্থাটি টিকিয়ে রাখবার জন্যই কাজ করে যাচ্ছে। তবু আজকের দিনের নারী একান্ত বাধ্য না হলে রক্ষণশীল মানসিকতায় আবদ্ধ থাকতে আগ্রহী নয় বলে দিনে দিনে অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে কর্মক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি ক্রমশ বাড়ছে। ২০১৯-এর মে মাসে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ‘স্ট্যাটেসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফ-২০১৮’ প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে মোট ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৫৫ সরকারি চাকরিজীবীর মধ্যে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮৭ জন নারী, যা মোট চাকরিজীবীর প্রায় ২৭ শতাংশ। ২০১০ সালে এই হার ছিল ২১ শতাংশ। সরকারি চাকরিতে নারীদের এই বৃদ্ধির চিত্র খুবই আশাব্যঞ্জক, যদিও শীর্ষস্থানীয় ও নীতিনির্ধারণী পদে নারীর অংশগ্রহণ এখনো অনেক কম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির মোট চাকরিজীবী ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৮৫ জনের মধ্যে নারী মাত্র ৩১ হাজার ৪৩২ জন। এই চিত্র বদল হওয়া আবশ্যক।
বেসরকারি খাতের চাকরিতে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্প খাত নারীর অংশগ্রহণের একটি বড়ো ক্ষেত্র। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, করপোরেট খাত ও অনানুষ্ঠানিক খাত। এগুলোর মধ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতেই নারীর অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি। উদ্বেগের বিষয় হলো শিক্ষাবঞ্চিত ও স্বল্প শিক্ষিত নারীদের শ্রমের ওপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা তৈরি পোশাক খাতে নারীর অংশগ্রহণ ক্রমশ কমছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর ২০১৮ সালে প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, তৈরি পোশাকশিল্প খাতে নারী আছেন মাত্র ৪৬ দশমিক ১৮ শতাংশ, অথচ ২০১৩ সালে করা একই সংস্থার জরিপ অনুযায়ী এই খাতে নারী অংশগ্রহণের হার ছিল ৫৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
এই অবস্থাটি তৈরি হওয়ার পেছনে একসঙ্গে অনেকগুলো বিষয় কাজ করছে। খাতটিতে অটোমেশন তথা প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ার সাথে সাথে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ কমছে। সুযোগের সমতার অভাবে দক্ষতা অর্জনে নারীরা পুরুষদের তুলনায় পিছিয়ে আছে। শ্রমিক নারীদের শিক্ষা ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কারখানার তরফেও বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। অন্যদিকে যন্ত্রনির্ভরতার বাইরের ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের কাজে সাধারণত নারীদের যুক্তই করা হয় না মালিকদের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। খাতটিতে এখন আগের তুলনায় বেতন বেড়েছে। তাতে এক সময় যেখানে পুরুষদের আগ্রহ কম ছিল, এখন এ কাজে তাদের আগ্রহও বেড়েছে। ফলে প্রতিযোগিতায় পুরুষরাই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আবার যেসব গ্রামাঞ্চল থেকে শিক্ষাবঞ্চিত ও অল্প শিক্ষিত মেয়েরা গার্মেন্টস-এ কাজ করতে আসত, সেসব জায়গার কোথাও কোথাও রক্ষণশীল মৌলবাদী গোষ্ঠীর নেতিবাচক প্রচারণাও প্রভাব রাখছে। তদুপরি কারখানাগুলো এখনো যৌন হয়রানিমুক্ত নয়। শ্রমিক নারীদের মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য উপযোগী টয়লেটের অনুপস্থিতিও রয়েছে অধিকাংশ কারখানায়।
এই অবস্থায় বিকল্প হিসেবে একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক নারী বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছেন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)-র তথ্য অনুযায়ী ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৯-এর এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ নারী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত হয়েছেন। ২০০৪ সালের পর থেকে তা ক্রমেই বেড়েছে। অধিকাংশ শ্রমিক নারী যেসব দেশে কর্মরত আছেন তার মধ্যে সৌদি আরব শীর্ষস্থানে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের মধ্যে আছে কুয়েত, ওমান, জর্ডান, লেবানন, মরিশাস, মালয়েশিয়া, প্রভৃতি। দেশে কৃষির পরিসর ক্রমে সংকুচিত হয়ে যাওয়া, গার্মেন্টসে সুযোগ কমে যাওয়া এবং বিদেশে বেতন বেশি হওয়ার কারণে কর্মক্ষম নারীদের মধ্যে বিদেশের কাজে আগ্রহও বাড়ছে। তবে সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে নির্যাতিত হয়ে ও লাশ হয়ে নারীদের ফিরে আসার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম হয়েছে। ফিরে আসাদের একাংশ নির্মম যৌন নির্যাতনের শিকার হবার অভিযোগ করেছেন। অনেকে স্থানীয় ভাষায় যোগাযোগ দক্ষতা না থাকা, নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শিতা না থাকা, ওখানকার খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারা, প্রত্যাশিত কাজ না পাওয়া, প্রতিশ্রুত বেতন না পাওয়া ও বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হওয়ার কারণেও ফেরত এসেছেন। যদিও বিদেশে নিয়োজিত শ্রমিক নারীদের সংখ্যা এবং এ খাত থেকে তাদের মাধ্যমে আসা রেমিটেন্সের পরিমাণের তুলনায় ফিরে আসা নারীদের হার কম, তবু এ ব্যাপারে বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। ভালো একটা জীবনের আশায় কাজের জন্য বিদেশে গিয়ে একজন নারীর নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসাও প্রত্যাশিত নয়। শ্রমিক নারীদের গন্তব্য দেশে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে যারা নিয়োজিত আছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগও রয়েছে। এরকম ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যাহার করে প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষায় যত্নবান হবেন এমন কর্মী নিয়োগ দেওয়া দরকার। এ ছাড়া বৈধ উপায়ে ছাড়া প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করে কেউ যাতে দালালদের মাধ্যমে অর্থ খরচ করে বিদেশে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য সরকারি-বেসরকারি উভয় খাত থেকেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া দরকার। যেসব এলাকার নারীদের মধ্যে বিদেশে যাবার প্রবণতা বেশি সেখানে সচেতনতা কার্যক্রমও চালানো দরকার, যাতে তারা সবকিছু জেনেবুঝে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে বিদেশে যেতে পারেন।
নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)-এর শর্ত অনুযায়ী সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশে যুগ যুগ ধরে নারী যে ভূমিকা পালন করে আসছে তার যথাযথ স্বীকৃতি ও সকল ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে নারীর উপার্জনমূলক কর্মের স্বাধীনতাকে নিষ্কণ্টক করতে হবে। পাশাপাশি সব ধরনের কর্মক্ষেত্রকে নারীর জন্য নিরাপদ করে তুলতে হবে। সেজন্য নারীর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, নারীর স্বাস্থ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসন প্রভৃতি খাতেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং নারীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি।
২০২০-এ বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনার ২৫ বছর পূর্ণ হলো। এবারের নারী দিবস এই ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনাকে ঘিরে উদযাপিত হচ্ছে। এই কর্মপরিকল্পনায় যে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে শ্রমিক নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ইস্যুও রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে সেগুলো এখনো অবাস্তবায়িত রয়ে গেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যুবসমাজকে চাকরির পিছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হবার সুপরামর্শ দিয়েছেন। তবে নারীদের উদ্যোক্তা হতে হলে পায়ের নিচে মাটি থাকতে হয়। কৃষিকাজ করতে হলে যেমন এ সম্পর্কিত সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পেতে নিজের নামে জমি থাকতে হয়, তেমনি অন্যান্য শিল্প বা ব্যবসা গড়ে তুলতে হলে ব্যাংকঋণ পেতে হয়। আবার ব্যাংকঋণ পেতে হলে সম্পদের মালিকানা থাকতে হয়, সেটা উত্তরাধিকার থেকে আসে। সুতরাং নারীসমাজের বহুদিনের দাবি নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক উত্তরাধিকার আইন বাতিল করে পিতামাতার সম্পদে সকল সন্তানের জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি।